ঢাকা ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বোয়ালখালীতে আহলা দরবারে মওলা আলী (রাঃ) এর ওরসে পাক ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo বোয়ালখালীতে ঈদ উপহার হিসেবে বিনামূল্যে চাল বিতরণ Logo বোয়ালখালীতে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন ২০২৫ উদ্বোধন Logo তোহফার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ, বোয়ালখালীতে রোজাদারদের মাঝে ইফতার বিতরণ Logo বোয়ালখালী সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের ইফতার বিতরণ Logo চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির ইফতার মাহফিলে মোস্তাক আহমদ খানের হুঁশিয়ারি Logo পীর আল্লামা মুফতি আবদুর রহীম আলকাদেরী (রহ.)’র স্মরণে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল Logo নূর সোপ নামে চট্টগ্রামে অবৈধ অনুমোদনহীন সাবান ও ওয়াশিং পাউডার তৈয়ারীর কারখানা। Logo দীঘিনালার লারমা স্কয়ারে আবারও অগ্নিকাণ্ড Logo বোয়ালখালীতে বৈদ্যুতিক শট সার্কিট থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়েছে পাঁচ বসতঘর
ই-পেপার দেখুন

বরগুনায় আমনের ফলনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা

  • বার্তা কক্ষ ::
  • আপডেট সময় ১০:৪৬:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২১
  • ৮৯৮ বার পঠিত

কালেরপত্র ডেষ্ক :

টানা বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত হয়ে বরগুনায় অধিকাংশ আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রধান ফসল আমন চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। কৃষকরা বলছেন, নতুন করে বীজতলা তৈরিরও সময় নেই, এ অবস্থায় এবার আমন ফলনে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহজুড়ে উপকূলীয় জেলা বরগুনায় ৪৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। টানা ভারি বর্ষণের ফসলের মাঠে পানি জমে। এতে আমনের বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে বীজ নষ্ট হয়ে যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে এ বছর বরগুনা জেলায় ৮৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ জন্য ৮ হাজার ৪৪৮ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়। কিন্তু টানা বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ৫ হাজার ৮১০ হেক্টর জমির বীজ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এছাড়া ১হাজার ৮৫০ হেক্টর জমির বীজতলা সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবদুর রশীদ বলেন, টানা বর্ষণের ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় এ বছর আমনের সব বীজতলাই নিমজ্জিত হয়েছিল। অপেক্ষাকৃত নিচু বীজতলার প্রায় সমস্ত বীজ নষ্ট হয়েছে। তবে কিছুটা উঁচু জমিতে তৈরি বীজতলার বীজ আংশিক বিনষ্ট হলেও বীজ রোপণের জন্য জমি প্রস্তত করতে করতে এসব বীজ রোপণ উপযোগী হয়ে উঠবে।

তবে বীজতলা নষ্ট হওয়ার প্রভাব পড়বে উপকূলীয় এ জেলার আমন ফলনে। তিনি বলেন, আমন বরগুনার কৃষকদের প্রধান ফসল। কিন্ত এবার আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না।

বরগুনা সদরের খাজুরতলা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, তিনি আমনের জন্য আধগানি (দুই একর) জমিতে বীজতলা করেছি। দেওইর (বৃষ্টি) কারণে আলচাষ (হালচাষ) করতে পারিনায়। এহন (এখন) পানি কমছে, চাষবাস কইররা জমিতে বীজ লাগামু। কিন্ত বীজ সব পইচ্চা নষ্ট অইয়া গ্যাছে। এহন কি করমু খ্যাতে? নতুন কইররা বীজ করারও সোমায় নাই এহন।

গত শনিবার দুপুরে আমতলী উপজেলার হলদিয়া, আঠারগাছিয়া, আমতলী সদর এবং তালতলীর ছোটবগী, পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ পানিতে তলিয়ে আছে। খাজুরতলা খালের জলকবাট দিয়ে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।

আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমতলী ও তালতলী উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৫০০ হেক্টর। অতিবর্ষণে দুই উপজেলার আমনের বীজতলার ৯০ শতাংশই নষ্ট হয়ে গেছে।

সময়মতো পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় আমতলীর আঠারগাছিয়া, হলদিয়া, চাওড়া, আমতলী সদর, কুকুয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া ও তালতলীর পচাকোড়ালিয়া, শারিকখালী, কড়াইবাড়িয়া, ছোটবগী ও বড়বগী ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আমনের বীজ নষ্ট হয়েছে।

চাওড়া ইউনিয়নের কাউনিয়া গ্রামের কৃষক আবদুল জব্বার মৃধা বলেন, ‘আমনের ক্ষেতে এহন (এখন) বীজ রোয়ার সময়, জমিন রেডি করছি চাষাবাদ কইররা, কিন্তু মোগো বীজ সব শ্যাষ, দেওইর পানি জইম্মা প্রায় সব বীজ নষ্ট।

একই অবস্থা জেলার বেতাগী ও বামনা উপজেলার আমন চাষিদেরও। বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, অতিবর্ষণে কৃষি সমৃদ্ধ বরগুনা জেলার আমন চাষাবাদের ক্ষতি হয়েছে। বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে আমরা কৃষি বিভাগকে কৃষকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে পরামর্শ ও সহায়তা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি।

ট্যাগস :

আপনার মতামত লিখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বোয়ালখালীতে আহলা দরবারে মওলা আলী (রাঃ) এর ওরসে পাক ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

বরগুনায় আমনের ফলনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা

আপডেট সময় ১০:৪৬:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২১

কালেরপত্র ডেষ্ক :

টানা বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত হয়ে বরগুনায় অধিকাংশ আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রধান ফসল আমন চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। কৃষকরা বলছেন, নতুন করে বীজতলা তৈরিরও সময় নেই, এ অবস্থায় এবার আমন ফলনে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহজুড়ে উপকূলীয় জেলা বরগুনায় ৪৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। টানা ভারি বর্ষণের ফসলের মাঠে পানি জমে। এতে আমনের বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে বীজ নষ্ট হয়ে যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে এ বছর বরগুনা জেলায় ৮৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ জন্য ৮ হাজার ৪৪৮ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়। কিন্তু টানা বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ৫ হাজার ৮১০ হেক্টর জমির বীজ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এছাড়া ১হাজার ৮৫০ হেক্টর জমির বীজতলা সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবদুর রশীদ বলেন, টানা বর্ষণের ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় এ বছর আমনের সব বীজতলাই নিমজ্জিত হয়েছিল। অপেক্ষাকৃত নিচু বীজতলার প্রায় সমস্ত বীজ নষ্ট হয়েছে। তবে কিছুটা উঁচু জমিতে তৈরি বীজতলার বীজ আংশিক বিনষ্ট হলেও বীজ রোপণের জন্য জমি প্রস্তত করতে করতে এসব বীজ রোপণ উপযোগী হয়ে উঠবে।

তবে বীজতলা নষ্ট হওয়ার প্রভাব পড়বে উপকূলীয় এ জেলার আমন ফলনে। তিনি বলেন, আমন বরগুনার কৃষকদের প্রধান ফসল। কিন্ত এবার আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না।

বরগুনা সদরের খাজুরতলা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, তিনি আমনের জন্য আধগানি (দুই একর) জমিতে বীজতলা করেছি। দেওইর (বৃষ্টি) কারণে আলচাষ (হালচাষ) করতে পারিনায়। এহন (এখন) পানি কমছে, চাষবাস কইররা জমিতে বীজ লাগামু। কিন্ত বীজ সব পইচ্চা নষ্ট অইয়া গ্যাছে। এহন কি করমু খ্যাতে? নতুন কইররা বীজ করারও সোমায় নাই এহন।

গত শনিবার দুপুরে আমতলী উপজেলার হলদিয়া, আঠারগাছিয়া, আমতলী সদর এবং তালতলীর ছোটবগী, পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ পানিতে তলিয়ে আছে। খাজুরতলা খালের জলকবাট দিয়ে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।

আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমতলী ও তালতলী উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৫০০ হেক্টর। অতিবর্ষণে দুই উপজেলার আমনের বীজতলার ৯০ শতাংশই নষ্ট হয়ে গেছে।

সময়মতো পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় আমতলীর আঠারগাছিয়া, হলদিয়া, চাওড়া, আমতলী সদর, কুকুয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া ও তালতলীর পচাকোড়ালিয়া, শারিকখালী, কড়াইবাড়িয়া, ছোটবগী ও বড়বগী ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আমনের বীজ নষ্ট হয়েছে।

চাওড়া ইউনিয়নের কাউনিয়া গ্রামের কৃষক আবদুল জব্বার মৃধা বলেন, ‘আমনের ক্ষেতে এহন (এখন) বীজ রোয়ার সময়, জমিন রেডি করছি চাষাবাদ কইররা, কিন্তু মোগো বীজ সব শ্যাষ, দেওইর পানি জইম্মা প্রায় সব বীজ নষ্ট।

একই অবস্থা জেলার বেতাগী ও বামনা উপজেলার আমন চাষিদেরও। বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, অতিবর্ষণে কৃষি সমৃদ্ধ বরগুনা জেলার আমন চাষাবাদের ক্ষতি হয়েছে। বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে আমরা কৃষি বিভাগকে কৃষকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে পরামর্শ ও সহায়তা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি।