বোয়ালখালী প্রতিনিধি::চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন এক প্রসূতি। সোমবার (৫ মে) সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও সময়মতো আল্ট্রাসনোগ্রাম সেবা পাননি তিনি।
জানা গেছে, উপজেলার পোপাদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আয়েশা নামের ওই প্রসূতি চিকিৎসকের পরামর্শে আল্ট্রাসনোগ্রাম ও হিমোগ্লোবিন পরীক্ষার জন্য সকাল ৬টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। সকাল ৯টায় বহির্বিভাগে টিকিট সংগ্রহ করে আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষে গেলে তাকে জানানো হয়, ওইদিনের জন্য নির্ধারিত পাঁচজন রোগীর তালিকা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়ে গেছে। প্রতিদিন কেবল পাঁচজন প্রসূতির আল্ট্রাসনোগ্রাম করার ‘নীতির’ কথা জানিয়ে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
তবে আয়েশা কক্ষের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর দেখেন, এক নার্স আরও ছয়জন রোগীর নামের নতুন একটি তালিকা কক্ষে জমা দেন। এতে আয়েশা হতাশ হয়ে পড়েন।
দুপুর ১টার দিকে স্থানীয়দের পরামর্শে আয়েশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাফরিন জাহেদ জিতির সঙ্গে দেখা করে পুরো বিষয়টি জানান। তাৎক্ষণিকভাবে ডা. জাফরিন এক সহকর্মীকে সঙ্গে দিয়ে আয়েশাকে আবার আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষে পাঠান। তবে ততক্ষণে আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক সেখান থেকে চলে গেছেন বলে জানা যায়।
শেষমেশ, দীর্ঘ অপেক্ষার পর দুপুর ২টার দিকে ওই চিকিৎসক ফিরে এলে আয়েশার আল্ট্রাসনোগ্রাম সম্পন্ন হয়।
এ প্রসঙ্গে আয়েশা বলেন, “ভোরে ঘরের সব কাজ ফেলে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম সকালেই পরীক্ষা করিয়ে বাড়ি ফিরবো। কিন্তু সারাদিন অপেক্ষার পর সেবা পেতে হবে, এমন ভোগান্তির কথা কল্পনাও করিনি।”
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাফরিন জাহেদ জিতি বলেন, “সপ্তাহে ছয়দিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নিয়মিত আল্ট্রাসনোগ্রাম সেবা দেওয়া হয়। আয়েশা দেরিতে হলেও সেবা পেয়েছেন। কেন এমন বিলম্ব ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
স্থানীয়রা বলছেন, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে এমন হয়রানি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এ ধরনের দুর্ভোগে না পড়ে, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।