ঢাকা ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo অগ্নি দুর্গত ৯ পরিবারকে ইউএনওর সহায়তা Logo আগুনে পুড়ল বোয়ালখালীতে ৫ বসতঘর Logo শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিকরা চোখ রাঙানিকে ভয় পায় না- মোস্তাক আহমদ খান Logo বোয়ালখালীতে খান ফাউন্ডেশনের যোগাযোগ  দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ Logo এদেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ৪৭ বছর ধরে লড়াই করে আসছে বিএনপি -মোস্তাক আহমদ খান Logo বোয়ালখালীতে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মতবিনিময় সভা Logo বোয়ালখালী ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আইডি ও সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠান Logo হাটহাজারী হামলার প্রতিবাদে বোয়ালখালীতে ইসলামী ফ্রন্টের বিক্ষোভ মিছিল Logo কুকুরের কামড়ে বোয়ালখালীতে আহত গবিধন, আতঙ্কে গ্রামবাসী Logo বোয়ালখালীতে বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা
ই-পেপার দেখুন

আমেরিকার বড় বিপদ হতে পারে সারগাসাম

  • বার্তা কক্ষ ::
  • আপডেট সময় ০৬:০৩:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
  • ৯২৮ বার পঠিত

ডেক্স:-  আটলান্টিক মহাসাগরে তৈরি হওয়া পাঁচ হাজার মাইল দীর্ঘ সামুদ্রিক শৈবাল সারগাসামের বেল্টটি ফ্লোরিডার উপকূল ও মেক্সিকো উপসাগরের উপকূলরেখার দিকে এগোচ্ছে।গবেষকরা বলছেন, এই শৈবাল সৈকতে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এই শৈবালের বিপজ্জনক স্তূপ উপকূলে চলে এলে হুমকিতে পড়বে আগামী পর্যটন মওসুম।বিজ্ঞানীরা ২০১১ সাল থেকে আটলান্টিকে তৈরি হওয়া এই সারগাসাম বেল্টের ওপর নজর রাখছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সারগাসামের ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে। চলতি বছর আমেরিকা মহাদেশজুড়ে এই শৈবালজনিত সমস্যা অনেক বাড়বে। ইতোমধ্যেই এই শৈবাল নিয়ে বিপাকে রয়েছে ক্যারিবীয় অঞ্চলগুলো।

এই সারগাসাম বেল্ট আফ্রিকার উপকূল থেকে মেক্সিকো উপসাগর পর্যন্ত পাঁচ হাজার মাইলেরও বেশি অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত। এটি গ্রেট আটলান্টিক সারগাসাম বেল্ট নামে পরিচিত। মহাকাশ থেকেও এটি দেখা যায়।ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটির হারবার ব্রাঞ্চ ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউটের গবেষক ড. ব্রায়ান ল্যাপয়েন্ট বলেছেন, সারগাসাম বেল্টটি বর্তমানে পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে এবং এটি গ্রীষ্মকালে ক্যারিবিয়ান অঞ্চল পেরিয়ে মেক্সিকো উপসাগরে চলে যাবে। আগামী জুলাই মাসে এটি ফ্লোরিডার সৈকতে পৌঁছতে পারে।

ল্যাপয়েন্টে বলেন, চলতি বছর সারগাসাম ফুল আগেই ফোটা শুরু হতে পারে এবং আগামী ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে সারগাসাম বেল্টের আকার দ্বিগুণ হতে পারে।ল্যাপয়েন্টে বলেন, ‘এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন সামুদ্রিক ঘটনা, যা সমস্যা তৈরি করছে। এটি সত্যিই একটি বিপর্যয়কর সমস্যা। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ইতোমধ্যেই সমুদ্রের পাঁচ-ছয় ফুট গভীর পর্যন্ত এই সৈকতের স্তূপ জমেছে।’

বার্বাডোসের স্থানীয় বাসিন্দারা সৈকত থেকে এই শৈবাল পরিষ্কার করতে প্রতিদিন ১ হাজার ৬০০টি ট্রাক ব্যবহার করছে, যাতে সৈকত পর্যটকদের জন্য উপযোগী থাকে।সারগাসাম হলো ৩০০টিরও বেশি প্রজাতির বাদামি শৈবালকে বোঝাতে ব্যবহার করা হয়। তবে সারগাসাম নাটান এবং সারগাসাম ফ্লুইটান নামের দুটি প্রজাতি সাধারণত আটলান্টিকে পাওয়া যায়।সারগাসাম যখন সমুদ্রসৈকতে জমা হয় তখন এক ধরনের গ্যাস নির্গত করে, যার গন্ধ পচা ডিমের মতো। এটি দ্রুত একটি সম্পদ থেকে সমুদ্রের জীবনের জন্য হুমকিতে পরিণত হতে পারে।

এ ছাড়া এই শৈবাল যখন ক্ষয়ে যায়, তখন হাইড্রোজেন সালফাইড নির্গত হয়। এ কারণে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়। এই হাইড্রোজেন সালফাইডের প্রভাবে হালকা মাথাব্যথা বা চোখ জ্বালাপোড়া থেকে শুরু করে অচেতনও হতে পারে। ২০২২ সালের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এর সঙ্গে গর্ভাবস্থায় জটিলতার সম্পর্ক রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবসৃষ্ট কর্মকাণ্ডের জন্য আটলান্টিকে সারগাসামের বৃদ্ধি ঘটছে। কঙ্গো, আমাজন এবং মিসিসিপির অববাহিকা অঞ্চলগুলোয় বিপুল পরিমাণে সয়া চাষ করা হয়। এর ফলে নদীগুলো দিয়ে প্রচুর নাইট্রোজেন ও ফসফরাস সমুদ্রে চলে আসছে। এটি সারগাসামের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। বিজ্ঞানীদের অনেকে মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন যতটা উদ্বেগজনক, সারগাসামের বৃদ্ধি তার চেয়ে বেশি উদ্বেগজনক। আর্সেনিক থাকায় এই শৈবাল জৈব সার হিসেবেও ব্যবহার করা যায় না। আর্সেনিকের কারণে বেশ কয়েকটি ক্যারিবিয়ান দেশ কম্পোস্টে সারগাসামের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।বিজ্ঞানীরা এর বিস্তার রোধে সাবানের মতো বাণিজ্যিক পণ্যগুলোতে এই শৈবালকে ব্যবহারের উপায় খুঁজছেন। সারগাসাম নিয়ে গবেষণা নতুন। তাই আশাব্যঞ্জক ফল পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা লাগতে পারে।

সূত্র : সিএনএন

ট্যাগস :

আপনার মতামত লিখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

অগ্নি দুর্গত ৯ পরিবারকে ইউএনওর সহায়তা

আমেরিকার বড় বিপদ হতে পারে সারগাসাম

আপডেট সময় ০৬:০৩:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩

ডেক্স:-  আটলান্টিক মহাসাগরে তৈরি হওয়া পাঁচ হাজার মাইল দীর্ঘ সামুদ্রিক শৈবাল সারগাসামের বেল্টটি ফ্লোরিডার উপকূল ও মেক্সিকো উপসাগরের উপকূলরেখার দিকে এগোচ্ছে।গবেষকরা বলছেন, এই শৈবাল সৈকতে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এই শৈবালের বিপজ্জনক স্তূপ উপকূলে চলে এলে হুমকিতে পড়বে আগামী পর্যটন মওসুম।বিজ্ঞানীরা ২০১১ সাল থেকে আটলান্টিকে তৈরি হওয়া এই সারগাসাম বেল্টের ওপর নজর রাখছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সারগাসামের ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে। চলতি বছর আমেরিকা মহাদেশজুড়ে এই শৈবালজনিত সমস্যা অনেক বাড়বে। ইতোমধ্যেই এই শৈবাল নিয়ে বিপাকে রয়েছে ক্যারিবীয় অঞ্চলগুলো।

এই সারগাসাম বেল্ট আফ্রিকার উপকূল থেকে মেক্সিকো উপসাগর পর্যন্ত পাঁচ হাজার মাইলেরও বেশি অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত। এটি গ্রেট আটলান্টিক সারগাসাম বেল্ট নামে পরিচিত। মহাকাশ থেকেও এটি দেখা যায়।ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটির হারবার ব্রাঞ্চ ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউটের গবেষক ড. ব্রায়ান ল্যাপয়েন্ট বলেছেন, সারগাসাম বেল্টটি বর্তমানে পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে এবং এটি গ্রীষ্মকালে ক্যারিবিয়ান অঞ্চল পেরিয়ে মেক্সিকো উপসাগরে চলে যাবে। আগামী জুলাই মাসে এটি ফ্লোরিডার সৈকতে পৌঁছতে পারে।

ল্যাপয়েন্টে বলেন, চলতি বছর সারগাসাম ফুল আগেই ফোটা শুরু হতে পারে এবং আগামী ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে সারগাসাম বেল্টের আকার দ্বিগুণ হতে পারে।ল্যাপয়েন্টে বলেন, ‘এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন সামুদ্রিক ঘটনা, যা সমস্যা তৈরি করছে। এটি সত্যিই একটি বিপর্যয়কর সমস্যা। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ইতোমধ্যেই সমুদ্রের পাঁচ-ছয় ফুট গভীর পর্যন্ত এই সৈকতের স্তূপ জমেছে।’

বার্বাডোসের স্থানীয় বাসিন্দারা সৈকত থেকে এই শৈবাল পরিষ্কার করতে প্রতিদিন ১ হাজার ৬০০টি ট্রাক ব্যবহার করছে, যাতে সৈকত পর্যটকদের জন্য উপযোগী থাকে।সারগাসাম হলো ৩০০টিরও বেশি প্রজাতির বাদামি শৈবালকে বোঝাতে ব্যবহার করা হয়। তবে সারগাসাম নাটান এবং সারগাসাম ফ্লুইটান নামের দুটি প্রজাতি সাধারণত আটলান্টিকে পাওয়া যায়।সারগাসাম যখন সমুদ্রসৈকতে জমা হয় তখন এক ধরনের গ্যাস নির্গত করে, যার গন্ধ পচা ডিমের মতো। এটি দ্রুত একটি সম্পদ থেকে সমুদ্রের জীবনের জন্য হুমকিতে পরিণত হতে পারে।

এ ছাড়া এই শৈবাল যখন ক্ষয়ে যায়, তখন হাইড্রোজেন সালফাইড নির্গত হয়। এ কারণে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়। এই হাইড্রোজেন সালফাইডের প্রভাবে হালকা মাথাব্যথা বা চোখ জ্বালাপোড়া থেকে শুরু করে অচেতনও হতে পারে। ২০২২ সালের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এর সঙ্গে গর্ভাবস্থায় জটিলতার সম্পর্ক রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবসৃষ্ট কর্মকাণ্ডের জন্য আটলান্টিকে সারগাসামের বৃদ্ধি ঘটছে। কঙ্গো, আমাজন এবং মিসিসিপির অববাহিকা অঞ্চলগুলোয় বিপুল পরিমাণে সয়া চাষ করা হয়। এর ফলে নদীগুলো দিয়ে প্রচুর নাইট্রোজেন ও ফসফরাস সমুদ্রে চলে আসছে। এটি সারগাসামের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। বিজ্ঞানীদের অনেকে মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন যতটা উদ্বেগজনক, সারগাসামের বৃদ্ধি তার চেয়ে বেশি উদ্বেগজনক। আর্সেনিক থাকায় এই শৈবাল জৈব সার হিসেবেও ব্যবহার করা যায় না। আর্সেনিকের কারণে বেশ কয়েকটি ক্যারিবিয়ান দেশ কম্পোস্টে সারগাসামের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।বিজ্ঞানীরা এর বিস্তার রোধে সাবানের মতো বাণিজ্যিক পণ্যগুলোতে এই শৈবালকে ব্যবহারের উপায় খুঁজছেন। সারগাসাম নিয়ে গবেষণা নতুন। তাই আশাব্যঞ্জক ফল পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা লাগতে পারে।

সূত্র : সিএনএন