চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বন্দর থানায় কর্মরত এক পুলিশ সদস্যকে বেধড়ক পিটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেলে নগরের আগ্রাবাদ এলাকার ছোটপোল গোল্ডেন টাচ্ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা তাকে পুলিশ সদস্য কিনা জিজ্ঞেস করেই লাঠিসোঁঠা ও হাত দিয়ে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে।
ওই পুলিশ সদস্যের নাম মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বন্দর থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত আছেন।
হামলার শিকার কনস্টেবল বলেন, ‘প্রায় পাঁচদিন বাসায় থাকার পরে আজ বিকেলে থানায় যাই। সেখানে গিয়ে সহকর্মীদের উপস্থিতি দেখতে না পেয়ে বাসায় ফিরছিলাম মোটরসাইকেল নিয়ে। আগ্রাবাদের বেপারীপাড়া অতিক্রম করে যখন আমি গোল্ডেন টাচ্ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এসে পৌঁছাই তখন কয়েকটা ছেলে আমাকে দাঁড় করায়। তারা আমাকে জিজ্ঞেস করে আমি পুলিশ কিনা।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ কিনা জিজ্ঞেস করার পর আমি উত্তর না দিয়ে চুপ করে ছিলাম। এর মধ্যে ১৫ থেকে ২০ জন ছেলে আমাকে এলোপাতাড়ি লাঠি দিয়ে আঘাত এবং কিল-ঘুষি দেওয়া শুরু করে। পরে আমার পরিচিত দুটো ছেলে গিয়ে আমাকে বাঁচায়। এরপর সেনাবাহিনীকে কল করা হলে কিছুক্ষণ পর তারা উদ্ধার করে আমাকে পুলিশ লাইনসে পৌঁছে দেয়।’
ওই কনস্টবলকে মারধরের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, তার ডান হাতের বাহু, পিঠ, বুক এবং মাথায় লাঠির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া তার গায়ে থাকা গেঞ্জি এবং জামা ছিড়ে ফেলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ‘আজ বিকেলে বন্দর থানার এক কনস্টেবলের ওপর জেলা পুলিশ লাইনসের সামনে ১৫ থেকে ২০ জন দুর্বৃত্ত হামলা চালায়। হামলাকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে তাকে উপর্যুপরি আঘাত করে এবং কিল ও ঘুষি মারে।’
‘এই হামলা ছাত্ররা করেনি। আমরা গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য এবং ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করবো। এরপর হামলাকারীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’ -যোগ করেন তিনি।
সিএমপিতে কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা ট্রমা কাটিয়ে স্বাভাবিকভাবে জনগণকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে এ হামলার ঘটনা আমাদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক এবং ভীতিকরও বটে। যেখানে পুলিশ সদস্যরা থানায় গিয়ে ডিউটি করতেই চাচ্ছে না সেখানে এসব ঘটনার পর পুলিশ সদস্যরা থানায় আগামীকাল থেকে যাবেন কিনা—সন্দেহ আছে।’