ঢাকা ০৮:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শ্রীমৎ নির্মলানন্দ গিরি মহারাজ তিরোধান উৎসব সম্পন্ন Logo “মানবতার কল্যাণে জাফর-মিনু ফাউন্ডেশনের অবদান” Logo বোয়ালখালীতে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত Logo বোয়ালখালীতে রথযাত্রা উপলক্ষে ছন্দারীয়া গ্রামে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত Logo ড্রোন না মশা? চীনার নতুন অস্ত্র Logo ১৭ বছর লুট, ১৪ বছর অভুক্ত—জামায়াত সে দল নয়’—বোয়ালখালীতে অধ্যাপক আহসান উল্লাহ Logo বোয়ালখালীতে মাদক ব্যবসায়ীকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড Logo ফটিকছড়িতে সোনালী ব্যাংকের ঋণ আদায়ে বিশেষ কর্মসূচি Logo বোয়ালখালীতে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি, দাবি ৬ দফার বাস্তবায়ন Logo সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও দোয়া মাহফিল
ই-পেপার দেখুন

প্রথম টোল পরিশোধ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

  • বার্তা কক্ষ ::
  • আপডেট সময় ১০:৪৫:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জুন ২০২২
  • ৯৯৪ বার পঠিত

প্রথম টোল পরিশোধ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে এই আনুষ্ঠানিকতা পালন করেন তিনি। 

এর আগে তিনি পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, ‘বিশ্বে পদ্মা সেতু একটি আশ্চর্য সৃষ্টি। এটি আমাদের মর্যাদা-সক্ষমতার শক্তি। যে সেতু আমরা নির্মাণ করেছি, সেটি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তিতে তৈরি।’

এদিকে, সকাল ১০টা ৫ মিনিটে পদ্মা সেতুর থিম সং পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এর আগে, পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে এরই মধ্যে পদ্মার মাওয়া প্রান্তে পৌঁছেছেন শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা।

সফরসূচি অনুয়ায়ী, শনিবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে ৯টায় তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা তার সঙ্গে ছিলেন।

দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী, বেলা ১১টায় মাওয়া পয়েন্টে স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম এবং বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

বেলা ১১টা ১২ মিনিটে মাওয়া পয়েন্টে নির্ধারিত টোল পরিশোধের মাধ্যমে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এরপর মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা করবেন বেলা ১১টা ২৩ মিনিটে। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে জাজিরা পয়েন্টে পৌঁছে সেতু ও ম্যুরাল-২ এর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের পর মোনাজাতেও যোগ দেবেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজে ৩৭ এবং ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর অংশ দৃশ্যমান হয়। পরে একের পর এক ৪২টি পিলারের ওপর বসানো হয় ৪১টি স্প্যান। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর শেষ ৪১তম স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে বহুমুখী ৬.১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ কাঠামো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, মূল সেতু নির্মাণের কাজটি করেছে চীনের ঠিকাদার কোম্পানি চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) এবং নদী শাসন করেছে চীনের সিনো হাইড্রো করপোরেশন। মোট ৩০, ১৯৩৩.৭ কোটি টাকা ব্যয়ে স্ব-অর্থায়নে সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে।

মূল সেতু নির্মাণের ব্যয় ১২,১৩৩.৩৯ কোটি টাকা (৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন টাওয়ার এবং গ্যাস লাইনের জন্য ১০০০ কোটি টাকা সহ) এবং ১৩.৮ কিলোমিটার নদী শাসন কাজের ব্যয় ৯,৪০০০.০ কোটি টাকা।

টোল প্লাজা এবং এসএ-২ সহ ১২ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোডের নির্মাণ ব্যয় ১,৯০৭.৬৮ কোটি টাকা (২টি টোল প্লাজা, ২টি থানা ভবন এবং ৩টি পরিষেবা এলাকাসহ) যেখানে পুনর্বাসনের ব্যয় ১,৫১৫.০০ কোটি টাকা, ২৬৯৩.২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় ব্যয় ১২৯০.৩ কোটি টাকা, কনসালটেন্সি ৬৭৮৩.৭ কোটি টাকা এবং অন্যান্য (বেতন, পরিবহন, সিডি ভ্যাট এবং ট্যাক্স, ফিজিক্যাল এবং প্রাইস কন্টিনজেন্সি, ইন্টারেস্ট ইত্যাদি) ১,৭৩১.১৭ টাকা। শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয় ২০১৭ সালের ৭ অক্টোবর।

২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর শরীয়তপুর জেলার জাজিরা পয়েন্টে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী নদী প্রশিক্ষণের কাজ এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে তিনি জাপান সফর করেন। তিনি পদ্মা ও রূপসা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করেন। জাপান সরকার দুটি নদীর ওপর সেতু নির্মাণে সম্মত হয়। যেহেতু পদ্মা নদী একটি শক্তিশালী নদী, যার প্রবল স্রোত, জাপান পদ্মা নদী জরিপ শুরু করে এবং তারা তার অনুরোধে রূপসা নদীতে নির্মাণ কাজ শুরু করে।

জাপান ২০০১ সালে পদ্মা নদীর উপর সেতু নির্মাণের সমীক্ষা প্রতিবেদন বাংলাদেশের কাছে জমা দেয়। জাপানি জরিপে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টকে পদ্মা সেতু নির্মাণের স্থান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

ট্যাগস :

আপনার মতামত লিখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীমৎ নির্মলানন্দ গিরি মহারাজ তিরোধান উৎসব সম্পন্ন

প্রথম টোল পরিশোধ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আপডেট সময় ১০:৪৫:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জুন ২০২২

প্রথম টোল পরিশোধ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে এই আনুষ্ঠানিকতা পালন করেন তিনি। 

এর আগে তিনি পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, ‘বিশ্বে পদ্মা সেতু একটি আশ্চর্য সৃষ্টি। এটি আমাদের মর্যাদা-সক্ষমতার শক্তি। যে সেতু আমরা নির্মাণ করেছি, সেটি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তিতে তৈরি।’

এদিকে, সকাল ১০টা ৫ মিনিটে পদ্মা সেতুর থিম সং পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এর আগে, পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে এরই মধ্যে পদ্মার মাওয়া প্রান্তে পৌঁছেছেন শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা।

সফরসূচি অনুয়ায়ী, শনিবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে ৯টায় তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা তার সঙ্গে ছিলেন।

দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী, বেলা ১১টায় মাওয়া পয়েন্টে স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম এবং বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

বেলা ১১টা ১২ মিনিটে মাওয়া পয়েন্টে নির্ধারিত টোল পরিশোধের মাধ্যমে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এরপর মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা করবেন বেলা ১১টা ২৩ মিনিটে। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে জাজিরা পয়েন্টে পৌঁছে সেতু ও ম্যুরাল-২ এর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের পর মোনাজাতেও যোগ দেবেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজে ৩৭ এবং ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর অংশ দৃশ্যমান হয়। পরে একের পর এক ৪২টি পিলারের ওপর বসানো হয় ৪১টি স্প্যান। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর শেষ ৪১তম স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে বহুমুখী ৬.১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ কাঠামো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, মূল সেতু নির্মাণের কাজটি করেছে চীনের ঠিকাদার কোম্পানি চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) এবং নদী শাসন করেছে চীনের সিনো হাইড্রো করপোরেশন। মোট ৩০, ১৯৩৩.৭ কোটি টাকা ব্যয়ে স্ব-অর্থায়নে সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে।

মূল সেতু নির্মাণের ব্যয় ১২,১৩৩.৩৯ কোটি টাকা (৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন টাওয়ার এবং গ্যাস লাইনের জন্য ১০০০ কোটি টাকা সহ) এবং ১৩.৮ কিলোমিটার নদী শাসন কাজের ব্যয় ৯,৪০০০.০ কোটি টাকা।

টোল প্লাজা এবং এসএ-২ সহ ১২ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোডের নির্মাণ ব্যয় ১,৯০৭.৬৮ কোটি টাকা (২টি টোল প্লাজা, ২টি থানা ভবন এবং ৩টি পরিষেবা এলাকাসহ) যেখানে পুনর্বাসনের ব্যয় ১,৫১৫.০০ কোটি টাকা, ২৬৯৩.২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় ব্যয় ১২৯০.৩ কোটি টাকা, কনসালটেন্সি ৬৭৮৩.৭ কোটি টাকা এবং অন্যান্য (বেতন, পরিবহন, সিডি ভ্যাট এবং ট্যাক্স, ফিজিক্যাল এবং প্রাইস কন্টিনজেন্সি, ইন্টারেস্ট ইত্যাদি) ১,৭৩১.১৭ টাকা। শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয় ২০১৭ সালের ৭ অক্টোবর।

২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর শরীয়তপুর জেলার জাজিরা পয়েন্টে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী নদী প্রশিক্ষণের কাজ এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে তিনি জাপান সফর করেন। তিনি পদ্মা ও রূপসা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করেন। জাপান সরকার দুটি নদীর ওপর সেতু নির্মাণে সম্মত হয়। যেহেতু পদ্মা নদী একটি শক্তিশালী নদী, যার প্রবল স্রোত, জাপান পদ্মা নদী জরিপ শুরু করে এবং তারা তার অনুরোধে রূপসা নদীতে নির্মাণ কাজ শুরু করে।

জাপান ২০০১ সালে পদ্মা নদীর উপর সেতু নির্মাণের সমীক্ষা প্রতিবেদন বাংলাদেশের কাছে জমা দেয়। জাপানি জরিপে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টকে পদ্মা সেতু নির্মাণের স্থান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।