ঢাকা ০৬:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩, ৬ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ঢাকার পাসপোর্ট অফিসগুলোর আওতা সংশোধন Logo বোয়ালখালী শতভাগ ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত হচ্ছে ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী Logo উন্নয়ন কাজের বরাদ্ধ ও বাস্তবায়নের হার ছবিসহ জমা দিতে হবেঃ জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা Logo বাগমনিরাম ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি আজিম, সম্পাদক বাবু Logo ২০১৪ সালের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এখন সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গেছে বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী Logo ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহি। Logo আমেরিকার বড় বিপদ হতে পারে সারগাসাম Logo নৌকার জয় দুই উপজেলায় Logo আহলা দরবার শরীফে হযরত সেহাবউদ্দীন খালেদ (রহঃ)’র ওরশ শরীফ আজ Logo রোজায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়ালে ব্যবস্থা নিতে ডিসিদের নির্দেশ
ই-পেপার দেখুন

চট্টগ্রামে কোরবানির ছাগল দিতে না পারায় খুন হল গৃহবধূ

পবিত্র ঈদুল আযহা কোরবানী ছাগাল দিতে না পারায় আরিফা মনি ওরফে রিয়া (১৯) নামে এক নববধুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

গত বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সকালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত আরিফা মনি ওরফে রিয়া রাউজান উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার বাড়ির বাবুর্চি মনির আহমেদের দ্বিতীয় মেয়ে।

জানা যায়, চলতি বছরের ২৮ শে মার্চ রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফার্ণিসার মিস্ত্রি মো. নাছির উদ্দিনের সঙ্গে আরিফা মনির পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের পক্ষ থেকে এটিকে আত্মহত্যা বলা হলেও আনিকার স্বজনদের দাবি- কোরবানির ঈদে ছাগল দাবি করেছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ছাগল না পেয়ে তারা পরিকল্পিতভাবে আনিকাকে হত্যা করেন।

আনিকার চাচাতো ভাই মো. বাদশা বলেন, বড় আব্বুর চার মেয়ে। কোনো ছেলে সন্তান নেই। দিনমজুরের কাজ করে মেয়ে বিয়ে দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। এলাকার মানুষের সহযোগিতায় তিন লাখ টাকা খরচ করে বিয়ে দেওয়া হয়। সামনে কোরবানির ঈদ, তাই আনিকার শ্বশুরবাড়ি থেকে ছাগল দাবি করা হয়েছিল। সামর্থ্য না থাকায় দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন বড় আব্বু। কিন্তু কিন্তু তারা এ বছর না দিলে আগামী বছর হলেও দিতে বলেন। এতেও বড় আব্বু রাজি হননি। এর জের ধরে তারা আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন। পরে আমাদের কাছে সে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর দেয়। আমরা গিয়ে তার লাশ নিচে নামানো অবস্থায় পাই। তার কানে-নাকে ছিল রক্ত। আমরা এটির সঠিক তদন্ত ও জড়িতদের শাস্তি চাই।

নিহতের স্বামী মো. নাছির উদ্দিন বলেন, চার-পাঁচদিন আগে আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আম-কাঠাল নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। চলে যাওয়ার সময় আমার শাশুড়ি কি যেন নিয়ে আমার মাকে গালাগালি ও আনিকাকে বকাবকি করেন। এর পর থেকেই আনিকা তার বাবার বাড়ির কারো ফোন আসলে রিসিভ করতো না। শুনেছি আনিকা ফোন করে আম-কাঁঠাল নিয়ে আসতে বলায় তার মা এমন করেছিলেন। তবে আমরা কেউ তাকে আম-কাঁঠালের কথা বলিনি। সে নিজেই বাড়িতে ফোন করে।

নাছির আরো বলেন, বাড়িতে যোগাযোগ না রাখলেও আমাদের সঙ্গে হাসিখুশিতেই ছিল আনিকা। ঘটনার দিন আমি ঘুমে ছিলাম। সকাল ৭টার দিকে আমার মা ও ভাবিদের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি- অন্য একটি রুমে ঘরের বিমের সঙ্গে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলে আছে আনিকার লাশ। সে বেঁচে আছে ভেবে তাড়াতাড়ি করে হাসপাতালে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু লাশ নামানোর পর দেখি মারা গেছে। পরে পুলিশকে জানালে তারা এসে লাশটি নিয়ে যায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর কেউ কেউ বলছেন কোরবানির ছাগল নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল দুই পরিবারের মধ্যে। আবার কেউ বলছেন মৌসুমি ফল নিয়ে দ্বন্দ্ব। আসলে সঠিক বিষয়টি তদন্ত করলে জানা যাবে।

রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহবুব মিল্কী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে সেটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে জেনেছি। লাশের শরীরেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

ট্যাগস :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

five × 3 =

ঢাকার পাসপোর্ট অফিসগুলোর আওতা সংশোধন

চট্টগ্রামে কোরবানির ছাগল দিতে না পারায় খুন হল গৃহবধূ

আপডেট সময় ১০:৫৯:২১ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৩ জুলাই ২০২২

পবিত্র ঈদুল আযহা কোরবানী ছাগাল দিতে না পারায় আরিফা মনি ওরফে রিয়া (১৯) নামে এক নববধুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

গত বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সকালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত আরিফা মনি ওরফে রিয়া রাউজান উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার বাড়ির বাবুর্চি মনির আহমেদের দ্বিতীয় মেয়ে।

জানা যায়, চলতি বছরের ২৮ শে মার্চ রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফার্ণিসার মিস্ত্রি মো. নাছির উদ্দিনের সঙ্গে আরিফা মনির পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের পক্ষ থেকে এটিকে আত্মহত্যা বলা হলেও আনিকার স্বজনদের দাবি- কোরবানির ঈদে ছাগল দাবি করেছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ছাগল না পেয়ে তারা পরিকল্পিতভাবে আনিকাকে হত্যা করেন।

আনিকার চাচাতো ভাই মো. বাদশা বলেন, বড় আব্বুর চার মেয়ে। কোনো ছেলে সন্তান নেই। দিনমজুরের কাজ করে মেয়ে বিয়ে দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। এলাকার মানুষের সহযোগিতায় তিন লাখ টাকা খরচ করে বিয়ে দেওয়া হয়। সামনে কোরবানির ঈদ, তাই আনিকার শ্বশুরবাড়ি থেকে ছাগল দাবি করা হয়েছিল। সামর্থ্য না থাকায় দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন বড় আব্বু। কিন্তু কিন্তু তারা এ বছর না দিলে আগামী বছর হলেও দিতে বলেন। এতেও বড় আব্বু রাজি হননি। এর জের ধরে তারা আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন। পরে আমাদের কাছে সে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর দেয়। আমরা গিয়ে তার লাশ নিচে নামানো অবস্থায় পাই। তার কানে-নাকে ছিল রক্ত। আমরা এটির সঠিক তদন্ত ও জড়িতদের শাস্তি চাই।

নিহতের স্বামী মো. নাছির উদ্দিন বলেন, চার-পাঁচদিন আগে আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আম-কাঠাল নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। চলে যাওয়ার সময় আমার শাশুড়ি কি যেন নিয়ে আমার মাকে গালাগালি ও আনিকাকে বকাবকি করেন। এর পর থেকেই আনিকা তার বাবার বাড়ির কারো ফোন আসলে রিসিভ করতো না। শুনেছি আনিকা ফোন করে আম-কাঁঠাল নিয়ে আসতে বলায় তার মা এমন করেছিলেন। তবে আমরা কেউ তাকে আম-কাঁঠালের কথা বলিনি। সে নিজেই বাড়িতে ফোন করে।

নাছির আরো বলেন, বাড়িতে যোগাযোগ না রাখলেও আমাদের সঙ্গে হাসিখুশিতেই ছিল আনিকা। ঘটনার দিন আমি ঘুমে ছিলাম। সকাল ৭টার দিকে আমার মা ও ভাবিদের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি- অন্য একটি রুমে ঘরের বিমের সঙ্গে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলে আছে আনিকার লাশ। সে বেঁচে আছে ভেবে তাড়াতাড়ি করে হাসপাতালে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু লাশ নামানোর পর দেখি মারা গেছে। পরে পুলিশকে জানালে তারা এসে লাশটি নিয়ে যায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর কেউ কেউ বলছেন কোরবানির ছাগল নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল দুই পরিবারের মধ্যে। আবার কেউ বলছেন মৌসুমি ফল নিয়ে দ্বন্দ্ব। আসলে সঠিক বিষয়টি তদন্ত করলে জানা যাবে।

রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহবুব মিল্কী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে সেটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে জেনেছি। লাশের শরীরেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।