ঢাকা ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ই-পেপার দেখুন

আমজাদ হোসেন: দেশের চলচ্চিত্রে অবিস্মরণীয় এক নক্ষত্র

  • বার্তা কক্ষ ::
  • আপডেট সময় ০৭:০৯:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২১
  • ৯৬৭ বার পঠিত

কালেরপত্র ডেষ্ক :

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে তিনি দিছেন দু’হাত খুলে। অভিনয়, নির্মাণ, গান, সাহিত্য শিল্পের বহু শাখায় করেছেন দাপুটে বিচরণ। সৃষ্টি করেছেন কালজয়ী সব কর্ম। কয়েক প্রজন্মকে দেখিয়েছেন সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথ। স্রোতের খেয়ায় ভেসে না গিয়ে নিজের বৈশিষ্ট্য ধরে রেখে কাজ করে গেছেন তিনি। আর তাই মানুষ এবং রাষ্ট্র তাকে দিয়েছে প্রাপ্য সম্মান ও ভালোবাসা।
বলছি কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার, অভিনেতা ও লেখক আমজাদ হোসেনের কথা। রেকর্ড সংখ্যক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করা এই বরেণ্য ব্যক্তিত্বের জন্মদিন আজ। শুভ জন্মদিন আমজাদ হোসেন।
১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন আমজাদ হোসেন। ছোট বেলা থেকেই তিনি লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন। বিখ্যাত দেশ পত্রিকায় তার লেখা প্রথম কবিতা ছাপা হয়েছিল। বহু ছড়া, গল্প, উপন্যাসে আমজাদ হোসেন তুলে এনেছেন মানব জীবনের প্রেক্ষাপট।
চলচ্চিত্রে আমজাদ হোসেনের পথচলা শুরু হয়েছিল অভিনেতা হিসেবে। ১৯৬১ সালে ‘তোমার আমার’ সিনেমায় অভিনয় করে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। এর দুই বছর পর ১৯৬৩ সালে চলচ্চিত্রের কাহিনীকার হিসেবে ‘ধারাপাত’ সিনেমার গল্প লেখেন।
পরবর্তীতে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের দলে যোগ দেন আমজাদ হোসেন। তার সঙ্গে সহকারী হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেন। পরিচালনায় আমজাদ হোসেনের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৭ সালে। সিনেমাটির নাম ছিল ‘আগুন নিয়ে খেলা’। এটি নুরুল হক বাচ্চুর সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন।
এককভাবে আমজাদ হোসেনের চলচ্চিত্র পরিচালনার সূচনা হয় একই বছর ‘জুলেখা’ সিনেমা দিয়ে। এরপর থেকে কেবল সৃষ্টিই করে গেছেন তিনি। একে একে নির্মাণ করেছেন ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতা পুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমণি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’ ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ ইত্যাদি।
আমজাদ হোসেন তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ১২ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন। এই সম্মাননায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক পুরস্কার বিজেতা তিনি। এর মধ্যে কেবল ‘গোলাপি এখন ট্রেনে’ সিনেমার জন্য তিনি একসঙ্গে পাঁচটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার রেকর্ড গড়েন। এছাড়া ৬ বার বাচসাস পুরস্কার পেয়েছিলেন আমজাদ হোসেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৩ সালে আমজাদ হোসেনকে একুশে পদক দেওয়া হয়। ২০০৪ সালে তিনি উপন্যাসে অবদানের জন্য পান বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।
আমজাদ হোসেনের দুই পুত্র সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমান। তারাও শিল্পজগতে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন আমজাদ হোসেন।

ট্যাগস :

আপনার মতামত লিখুন

স্মার্ট পৌরসভা গড়তে সকলের সহযোগিতা চায়লেন পৌরমেয়র জহুর 

আমজাদ হোসেন: দেশের চলচ্চিত্রে অবিস্মরণীয় এক নক্ষত্র

আপডেট সময় ০৭:০৯:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২১

কালেরপত্র ডেষ্ক :

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে তিনি দিছেন দু’হাত খুলে। অভিনয়, নির্মাণ, গান, সাহিত্য শিল্পের বহু শাখায় করেছেন দাপুটে বিচরণ। সৃষ্টি করেছেন কালজয়ী সব কর্ম। কয়েক প্রজন্মকে দেখিয়েছেন সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথ। স্রোতের খেয়ায় ভেসে না গিয়ে নিজের বৈশিষ্ট্য ধরে রেখে কাজ করে গেছেন তিনি। আর তাই মানুষ এবং রাষ্ট্র তাকে দিয়েছে প্রাপ্য সম্মান ও ভালোবাসা।
বলছি কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার, অভিনেতা ও লেখক আমজাদ হোসেনের কথা। রেকর্ড সংখ্যক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করা এই বরেণ্য ব্যক্তিত্বের জন্মদিন আজ। শুভ জন্মদিন আমজাদ হোসেন।
১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন আমজাদ হোসেন। ছোট বেলা থেকেই তিনি লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন। বিখ্যাত দেশ পত্রিকায় তার লেখা প্রথম কবিতা ছাপা হয়েছিল। বহু ছড়া, গল্প, উপন্যাসে আমজাদ হোসেন তুলে এনেছেন মানব জীবনের প্রেক্ষাপট।
চলচ্চিত্রে আমজাদ হোসেনের পথচলা শুরু হয়েছিল অভিনেতা হিসেবে। ১৯৬১ সালে ‘তোমার আমার’ সিনেমায় অভিনয় করে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। এর দুই বছর পর ১৯৬৩ সালে চলচ্চিত্রের কাহিনীকার হিসেবে ‘ধারাপাত’ সিনেমার গল্প লেখেন।
পরবর্তীতে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের দলে যোগ দেন আমজাদ হোসেন। তার সঙ্গে সহকারী হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেন। পরিচালনায় আমজাদ হোসেনের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৭ সালে। সিনেমাটির নাম ছিল ‘আগুন নিয়ে খেলা’। এটি নুরুল হক বাচ্চুর সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন।
এককভাবে আমজাদ হোসেনের চলচ্চিত্র পরিচালনার সূচনা হয় একই বছর ‘জুলেখা’ সিনেমা দিয়ে। এরপর থেকে কেবল সৃষ্টিই করে গেছেন তিনি। একে একে নির্মাণ করেছেন ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতা পুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমণি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’ ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ ইত্যাদি।
আমজাদ হোসেন তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ১২ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন। এই সম্মাননায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক পুরস্কার বিজেতা তিনি। এর মধ্যে কেবল ‘গোলাপি এখন ট্রেনে’ সিনেমার জন্য তিনি একসঙ্গে পাঁচটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার রেকর্ড গড়েন। এছাড়া ৬ বার বাচসাস পুরস্কার পেয়েছিলেন আমজাদ হোসেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৩ সালে আমজাদ হোসেনকে একুশে পদক দেওয়া হয়। ২০০৪ সালে তিনি উপন্যাসে অবদানের জন্য পান বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।
আমজাদ হোসেনের দুই পুত্র সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমান। তারাও শিল্পজগতে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন আমজাদ হোসেন।