ঢাকা ০৮:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo অগ্নি দুর্গত ৯ পরিবারকে ইউএনওর সহায়তা Logo আগুনে পুড়ল বোয়ালখালীতে ৫ বসতঘর Logo শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিকরা চোখ রাঙানিকে ভয় পায় না- মোস্তাক আহমদ খান Logo বোয়ালখালীতে খান ফাউন্ডেশনের যোগাযোগ  দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ Logo এদেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ৪৭ বছর ধরে লড়াই করে আসছে বিএনপি -মোস্তাক আহমদ খান Logo বোয়ালখালীতে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মতবিনিময় সভা Logo বোয়ালখালী ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আইডি ও সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠান Logo হাটহাজারী হামলার প্রতিবাদে বোয়ালখালীতে ইসলামী ফ্রন্টের বিক্ষোভ মিছিল Logo কুকুরের কামড়ে বোয়ালখালীতে আহত গবিধন, আতঙ্কে গ্রামবাসী Logo বোয়ালখালীতে বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা
ই-পেপার দেখুন

এ সমাজে আরো অর্পনের দরকার

  • বার্তা কক্ষ ::
  • আপডেট সময় ১১:০২:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুন ২০২২
  • ৮৭৮ বার পঠিত

অধীর বড়ুয়া: যতটুকু মনে পড়ে ১৯৮৫সালে হাজী আজগর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতেই তোর সাথে পরিচিতি।

৬ষ্ঠ, ৭ম,৮ম শ্রেণি পেরুতেই তোর বহুমাত্রিক প্রতিভারগুণ পরিলক্ষিত হতো। নবমে উঠে বিজ্ঞানের ব্যবহারিক খাতা অংকন ভাবিয়ে তুলেছে।
তার পর থেকে তুই নেমে পড়লি রঙতুলির পরশ বুলাতে আর আমরা বই- খাতার সাথে। আমরা বই-খাতার সাথে যুদ্ধ করলেও তুই একাডেমিক বই-খাতার বাইরে এসে তুলির পরশ বুলিয়ে বা চিত্রশিল্পী হিসেবে যে অবাদ পরিচিতি ও কর্ম যজ্ঞ শুরু করেছিলি তা আমরা আরো ১০/১৫ বছর পরে এসে গড়ে তুলতে হয়েছে।
তুই যখন এলাকায় চিত্রযাদুকরী করছিস তখন আমাদের কোন ইনডেক্স ছিল না। তৎসময়ে শাকপুরা তথা এ বৃহৎ এলাকায় ভাল চিত্রশিল্পীর যথেষ্ট অভাব ছিল তাই তোর কদর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা- কর্মীদের মাঝে অর্পন একটি নাম এবং প্রতিষ্টানে রূপ নেয়। আওয়ামীলীগের সভা-মিছিল হলে,বিএনপির সভা-মিছিল হলে, জামাত শিবির বা জাতীয় পার্টি বা অন্যকোন রাজনৈতিক দলের সভা- মিছিল হলে অর্পনকে হর্ণ্য হয়ে খোঁজা শুরু হতো। কারণ অর্পন তাড়াতাড়ি একটি ব্যানার লিখে দাও,এই রাখ এডভান্স টাকা বা পরে টাকা দেব। পরে কার টাকা কই হদিস নেই। সমাজ তথা এলাকায় কোন অনুষ্ঠান হলে ষ্টেইজ সাজানো, বাড়ী-ঘর আল্পনা করার জন্য অর্পনের ডাক ছিল অবাধ। এ কাজগুলো কখনো দিনান্ত আবার কখনো পুরো রাত জেগে। বিশেষ করে রাত জেগে কাজ করতে গিয়ে অর্পন রাজনীতিবিদ বলেন বা সমাজ বিদ বলেন সকলের প্রিয় মানুষ হিসেবে প্রিয় কাজ করে দিয়েছেন। এখানে তার পারিশ্রমিকের মূল্য কেউ যথার্থ দেন নি। তাই অর্পন তখন শুধু মানুষের ডাকে সাড়া দিয়ে গেছে। পক্ষান্তরে ঠিকে থাকার অধিকার টুকু ঐ সমস্ত মানুষের কাজ থেকে যথার্থ পাইনি,অনেক সময় পেয়েছে রোষানলের শিকার, হামলার শিকার,মামলার শিকার। তার থেকে উপকার গ্রহণ করেছে অনেকেই ভালবুদ্ধি বা পরামর্শ তাকে কেউ দেননি। ফলে জীবন প্রক্রিয়া একটু ব্যতিক্রমও ছিল। তবে সব কিছু মিলে অর্পন তখনকার আমলের আলোচিত ব্যক্তি। এ আলোচিত অর্পন এসময় রাজনীতির পিছনে নেয়া শুরু করে। তখন বিএনপির শাসনামল থাকাতে সে চৌকসতার মাধ্যমে রাজনীতির কয়েকটি গন্ডি পেরিয়ে হঠাৎ শাকপুরা ইউনিয়ন বিএনপির যুবদলের সাধারন সম্পাদকের পদটি হাতিয়ে নেয়। তখনকার সময়ে দেশে শক্তি শালী রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপির একটি অন্যতম। বৌদ্ধ ইতিহাসে বোয়ালখালীতে তখনকার সময় অর্পনই রাজনৈতিক বলেন পরিচিতি জনক ব্যক্তি বলেন অর্পনই সর্বস্ব একজন।
গরীব ঘরের লেখা পড়ায় না এগুনো সন্তান অর্পন স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তিতে এগুতে না পারলেও সমাজ,সংগঠন ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এবং নিজ তুলিশিল্পী বলেন চিত্রশিল্পী বলেন তাতে সে একনামে পরিচিত।
সে শুধু চিত্রশিল্পী বা তুলি শিল্পী হিসেবে নয়, সে ফুটবল খেলা,সমাজের বিয়ে-শাদি, ধর্মীয়, সাংগঠনিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে তার অতিমাত্রায় অবদান ছিল। তার কর্মের প্রতিদান বা যথার্থতা সমাজ বা আমরা বা রাজনৈতিক ভাবে তেমনটা দেয়া হয়নি, আমিও পারিনি দিতে।
না দেয়ার মধ্যে অর্পন যে এত তাড়াতাড়ি চির বিদায় নেবে তাও বুঝতে পারিনি।
৩০ মে তার সাপ্তাহিত ক্রিয়া/ কর্মানুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে যখন খাচ্ছিলাম তখন মুখে ভাতের প্রথম গ্লাস ডুকাতেই হৃদপিন্ডে আঁচর খেয়ে উঠেছিল,কারণ আমার সামনে তার অবলা স্ত্রী, ৩/৪ বছর বয়সী কন্যা ও ১২/১৪ বছর বয়সী ছেলে মৃয়মান হয়ে কেউ খেতে বসেছে আবার কেউ পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
তাদের দেখে প্লেট বা হাতের ভাত আর মুখে উঠছে না।
নিয়তির কি খেলা, এ কেমন কথা আমার বয়সী অর্পণ এত তাড়াতাড়ি না ফেরার দেশে। আমার কি হবে, আমি কেমন করবো এমন ভাবনায় আজ ক’দিন অতিবাহিত করছি।

অর্পন তুই যেখানে যাস ভাল থাকিস, অন্ততপক্ষে আমি তোর স্মৃতিচারন করবো সময় পেলেই…..

এ সমাজে আরো অর্পনের দরকার বেশী বেশী করে,
অযদিও জীবিত অর্পনকে আমরা মর্যাদা বা যথার্থ সম্মান দিতে পারিনি।

ট্যাগস :

আপনার মতামত লিখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

অগ্নি দুর্গত ৯ পরিবারকে ইউএনওর সহায়তা

এ সমাজে আরো অর্পনের দরকার

আপডেট সময় ১১:০২:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুন ২০২২

অধীর বড়ুয়া: যতটুকু মনে পড়ে ১৯৮৫সালে হাজী আজগর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতেই তোর সাথে পরিচিতি।

৬ষ্ঠ, ৭ম,৮ম শ্রেণি পেরুতেই তোর বহুমাত্রিক প্রতিভারগুণ পরিলক্ষিত হতো। নবমে উঠে বিজ্ঞানের ব্যবহারিক খাতা অংকন ভাবিয়ে তুলেছে।
তার পর থেকে তুই নেমে পড়লি রঙতুলির পরশ বুলাতে আর আমরা বই- খাতার সাথে। আমরা বই-খাতার সাথে যুদ্ধ করলেও তুই একাডেমিক বই-খাতার বাইরে এসে তুলির পরশ বুলিয়ে বা চিত্রশিল্পী হিসেবে যে অবাদ পরিচিতি ও কর্ম যজ্ঞ শুরু করেছিলি তা আমরা আরো ১০/১৫ বছর পরে এসে গড়ে তুলতে হয়েছে।
তুই যখন এলাকায় চিত্রযাদুকরী করছিস তখন আমাদের কোন ইনডেক্স ছিল না। তৎসময়ে শাকপুরা তথা এ বৃহৎ এলাকায় ভাল চিত্রশিল্পীর যথেষ্ট অভাব ছিল তাই তোর কদর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা- কর্মীদের মাঝে অর্পন একটি নাম এবং প্রতিষ্টানে রূপ নেয়। আওয়ামীলীগের সভা-মিছিল হলে,বিএনপির সভা-মিছিল হলে, জামাত শিবির বা জাতীয় পার্টি বা অন্যকোন রাজনৈতিক দলের সভা- মিছিল হলে অর্পনকে হর্ণ্য হয়ে খোঁজা শুরু হতো। কারণ অর্পন তাড়াতাড়ি একটি ব্যানার লিখে দাও,এই রাখ এডভান্স টাকা বা পরে টাকা দেব। পরে কার টাকা কই হদিস নেই। সমাজ তথা এলাকায় কোন অনুষ্ঠান হলে ষ্টেইজ সাজানো, বাড়ী-ঘর আল্পনা করার জন্য অর্পনের ডাক ছিল অবাধ। এ কাজগুলো কখনো দিনান্ত আবার কখনো পুরো রাত জেগে। বিশেষ করে রাত জেগে কাজ করতে গিয়ে অর্পন রাজনীতিবিদ বলেন বা সমাজ বিদ বলেন সকলের প্রিয় মানুষ হিসেবে প্রিয় কাজ করে দিয়েছেন। এখানে তার পারিশ্রমিকের মূল্য কেউ যথার্থ দেন নি। তাই অর্পন তখন শুধু মানুষের ডাকে সাড়া দিয়ে গেছে। পক্ষান্তরে ঠিকে থাকার অধিকার টুকু ঐ সমস্ত মানুষের কাজ থেকে যথার্থ পাইনি,অনেক সময় পেয়েছে রোষানলের শিকার, হামলার শিকার,মামলার শিকার। তার থেকে উপকার গ্রহণ করেছে অনেকেই ভালবুদ্ধি বা পরামর্শ তাকে কেউ দেননি। ফলে জীবন প্রক্রিয়া একটু ব্যতিক্রমও ছিল। তবে সব কিছু মিলে অর্পন তখনকার আমলের আলোচিত ব্যক্তি। এ আলোচিত অর্পন এসময় রাজনীতির পিছনে নেয়া শুরু করে। তখন বিএনপির শাসনামল থাকাতে সে চৌকসতার মাধ্যমে রাজনীতির কয়েকটি গন্ডি পেরিয়ে হঠাৎ শাকপুরা ইউনিয়ন বিএনপির যুবদলের সাধারন সম্পাদকের পদটি হাতিয়ে নেয়। তখনকার সময়ে দেশে শক্তি শালী রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপির একটি অন্যতম। বৌদ্ধ ইতিহাসে বোয়ালখালীতে তখনকার সময় অর্পনই রাজনৈতিক বলেন পরিচিতি জনক ব্যক্তি বলেন অর্পনই সর্বস্ব একজন।
গরীব ঘরের লেখা পড়ায় না এগুনো সন্তান অর্পন স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তিতে এগুতে না পারলেও সমাজ,সংগঠন ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এবং নিজ তুলিশিল্পী বলেন চিত্রশিল্পী বলেন তাতে সে একনামে পরিচিত।
সে শুধু চিত্রশিল্পী বা তুলি শিল্পী হিসেবে নয়, সে ফুটবল খেলা,সমাজের বিয়ে-শাদি, ধর্মীয়, সাংগঠনিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে তার অতিমাত্রায় অবদান ছিল। তার কর্মের প্রতিদান বা যথার্থতা সমাজ বা আমরা বা রাজনৈতিক ভাবে তেমনটা দেয়া হয়নি, আমিও পারিনি দিতে।
না দেয়ার মধ্যে অর্পন যে এত তাড়াতাড়ি চির বিদায় নেবে তাও বুঝতে পারিনি।
৩০ মে তার সাপ্তাহিত ক্রিয়া/ কর্মানুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে যখন খাচ্ছিলাম তখন মুখে ভাতের প্রথম গ্লাস ডুকাতেই হৃদপিন্ডে আঁচর খেয়ে উঠেছিল,কারণ আমার সামনে তার অবলা স্ত্রী, ৩/৪ বছর বয়সী কন্যা ও ১২/১৪ বছর বয়সী ছেলে মৃয়মান হয়ে কেউ খেতে বসেছে আবার কেউ পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
তাদের দেখে প্লেট বা হাতের ভাত আর মুখে উঠছে না।
নিয়তির কি খেলা, এ কেমন কথা আমার বয়সী অর্পণ এত তাড়াতাড়ি না ফেরার দেশে। আমার কি হবে, আমি কেমন করবো এমন ভাবনায় আজ ক’দিন অতিবাহিত করছি।

অর্পন তুই যেখানে যাস ভাল থাকিস, অন্ততপক্ষে আমি তোর স্মৃতিচারন করবো সময় পেলেই…..

এ সমাজে আরো অর্পনের দরকার বেশী বেশী করে,
অযদিও জীবিত অর্পনকে আমরা মর্যাদা বা যথার্থ সম্মান দিতে পারিনি।